Banner 728x90

তদন্ত আটকে আছে গ্রেপ্তার ৮ জনে, সোনা উদ্ধারে কিছু হয়নি

 

তদন্ত আটকে আছে গ্রেপ্তার ৮ জনে, সোনা উদ্ধারে কিছু হয়নি




বিমানবন্দরের গুদাম থেকে সোনা চুরির বিষয়টি জানাজানি হয় গত বছর আগস্টের শেষ দিকে। ৩ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থানায় মামলা করে শুল্ক বিভাগ। শুরুতে এই মামলা তদন্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা আটজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, আকরাম শেখ এবং সিপাহি রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হালদার। তাঁরা বিভিন্ন পালায় গুদামের দায়িত্ব পালন করতেন।



পিবিআই গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর মামলা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সাইফুল, শহীদুল ও নিয়ামতসহ অন্যদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সোনা চুরির ঘটনা স্বীকার করলেও আদালতে গিয়ে অস্বীকার করেন। তবে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেছে। লকারের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম সোনা চুরির সঙ্গে জড়িত। এই দুজনের সঙ্গে সেখানে দায়িত্বে থাকা অন্য কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন।





সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চুরি হওয়া সোনাগুলো ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গুদামে জমা রাখা হয়। সেগুলো এত দিন গুদামে রাখার কথা নয়। নিয়মানুযায়ী, প্রতি মাসে একবার করে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জমা দেওয়া এবং উদ্ধার করা সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়ার কথা। এখানে তা মানা হয়নি। এরপর সোনা চুরির ঘটনা নিজেদের মধ্যে জানাজানি হওয়ার পর ঢাকা শুল্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাইরে থেকে সোনা কিনে লকারে রেখে চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন।



তদন্ত সংশ্লিষ্ট পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তার আটজন আসামিকেই রিমান্ডে এনে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এদের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আকরাম শেখ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি ঢাকা শুল্ক বিভাগে যোগ দেন। এক মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা ঢাকা শুল্ক বিভাগের গুদামের রক্ষাণাবেক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। অন্য জায়গা থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ রানাকেও একই দায়িত্বে বদলি করা হয়।



আকরাম শেখ দায়িত্ব নেওয়ার পর জব্দ করা সোনা কীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হয়, তা শিখতে চান। এ ছাড়া আগে থেকে দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ও শহিদুলকে জব্দ করা সোনা ও বিদেশি মুদ্রা আটকের নথি (ডিএম) অনুযায়ী বুঝিয়ে দিতে বলেন। তখন তাঁরা আকরামকে বলতেন, ডিএম অনুযায়ী মালামাল না মিললে দুজনে মিলিয়ে দেবেন।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আকরাম পিবিআইকে আরও জানান, লকার যে গুদামে রয়েছে, তার চাবি থাকত সাইফুল ও শহিদুলের কাছে। ডিএম অনুযায়ী ২০২০ সালে জব্দ হওয়া কিছু মালামাল লকারে কেন, সে বিষয়ে দুজনের কাছে জানতে চান আকরাম। তখন আনক্লেইমড (মালিকানার দাবিহীন) সোনা ও মালামাল নিয়ে আকরামকে বেশি মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দেন সাইফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিমানবন্দরের গুদামের মালামালের তালিকা করা শুরু হলে তাঁরা দুজনে মিলে চুরির নাটক সাজান বলে সংশ্লিষ্ট পিবিআই কর্মকর্তারা জানান।

No comments

Powered by Blogger.